IPS Indira Mukherjee: টাটার চাকরি ছেড়ে IPS, জানেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় কে?
IPS Indira Mukherjee: নির্যাতিতার গায়ে চাপা দেওয়া চাদরের রঙ কী ছিল, সেমিনার রুমে কারা ছিল, এই সব উত্তর দিচ্ছেন ইন্দিরা। আরজি কর কাণ্ডের আগে রাজভবনের ঘটনাতেও দায়িত্বেও ছিলেন এই আইপিএস। সদ্য পুলিশ মেডল পাওয়া এই অফিসারের উপর কেন এত ভরসা?
কলকাতা: আরজি কর-কাণ্ডে সাধারণ মানুষের একাংশের রোষের মুখে পড়েছে পুলিশ। তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর পুলিশ কতটা সক্রিয় ছিল? কিনারা করতে কতটা তৎপর ছিল? তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ঘটনার পর থেকেই। আর ১৪ অগস্ট রাতে আরজি করে তাণ্ডবের পর সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠতে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিবাদ মিছিলে। ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে রীতিমতো হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ‘আরজি করের চিকিৎসকের মতো হাল হবে’, এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তিলোত্তমার বাবা সরাসরি বলছেন ‘ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় মিথ্যা কথা বলছেন’। তারপরও ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কেই প্রতিনিয়ত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে দেখা যাচ্ছে।
নির্যাতিতার গায়ে চাপা দেওয়া চাদরের রঙ কী ছিল, সেমিনার রুমে কারা ছিলেন, এই সব উত্তর দিচ্ছ🌸েন ইন্দিরা। আরজি কর কাণ্ডের আগে রাজভবনের ঘটনাতেও দায়িত্বে ছিলেন এই আইপিএস। সদ্য পুলিশ মেডল পাওয়া এই অফিসারের উপর কেন এত ভরসা? কী তꦕাঁর পরিচয়?
আইটি কর্মী ছিলেন ইন্দিরা মুখোপাধ্য়ায়
১৯৮৫ সালের ♛২৯ ড✅িসেম্বর জন্ম ইন্দিরা মুখোপাধ্য়ায়ের। কেরিয়ারের শুরুতে তথ্য প্রযুক্তি কর্মী ছিলেন তিনি। চাকরি করতেন টাটা কনসাল্টেন্সি সার্ভিস বা টিসিএস (TCS)-এ। ২০০৮ সালে যখন রিসেশনের মধ্যে বহু তথ্য প্রযুক্তি কর্মীর চাকরি যায়, তখন তিনি চাকরির নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এরপর ইউপিএসসি-র জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন ও পরীক্ষা দেন। ২০১৩ সালে পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হন।
আইপিএস হিসেবে রাজ্যে একাধিক দায়িত্ব সামলেছেন
আইপিএস ইন্দিরা ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্যাডারের ২০১৩ সালের ব্যাচের আইপিএস অফিসার। রাজ্যের একাধিক জেলায়♏ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। উত্তর দিনাজপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছিলেন ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। পরবর্তীতে ঝাড়গ্রাম ও পূর্ব মেদিনীপুর দুই জেলাতেই পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এছাড়া বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি পদে ছিলেন। বর্তমানে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল পদে।
রায়গঞ্জের ‘ভগবান’ ইন্দিরা
২০১৭ সালে সংবাদ শিরোনামে আসেন তিনি। তখন তিনি উত্তর দিনাজপুরে এএসপি পদে কর্মরত। রায়গঞ্জের ওপর দিয়ে একদিন কাজ সেরে ফি๊রছিলেন কর্ণজোড༺়ার বাংলোতে। ফেরার সময় তিনি দেখতে পান, এক মহিলা রাস্তার ওপর একা বসে আছেন। ফেব্রুয়ারি মাস, তখনও বেশ ঠান্ডা আবহাওয়া। তার মধ্যে এভাবে একজন মহিলাকে দেখতে পেয়ে চমকে যান ইন্দিরা মুখোপাধ্য়ায়।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাইকেল থেকে নেমে মহিলার কাছে যান। গিয়ে দেখেন ওই মহিলার শ্বাসনালি কাটা। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখ𒊎েই তিনি যোগাযোগ করেন হাসপাতালে। মহিলাকে দ্রুত নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তিনি। পরে জানা যায়, ওই মহিলাকে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, ওই মহিলাকে ঠিক সময়♏ে তিনি হাসপাতালে নিয়ে না গেলে বাঁচানোই অসম্ভব হত। তারপর থেকে ইন্দিরা মুখোপাধ্য়ায়কে ভগবানের চোখে দেখতেন রায়গঞ্জের মানুষ।
রাজ্যপালের রোষের মুখে পড়েছিলেন আইপিএস ইন্দিরা
চলতি বছরের ঘটনা। রাজভবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছিলেন এক মহিলা। রাজভবনের ওই মহি🥂লা অস্থায়ী কর্মী হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে কলকাতা পুলিশ। সেই সময় এক বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির দায়িত্বে রাখা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে।
রাজ্যপাল সি ꧙ভি আনন্দ বোস সেই সময় আইপিএস ইন্দিরার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের কাছে নালিশ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্যপালের নামে যে গুজব ছড়🌺ানো হচ্ছে, তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন আইপিএস অফিসার। রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি।
শুধু কেন্দ্🧸রীয় সরকার নয়, রাজ্য সরকারের কাছেও এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, কেন্দ্র সরাসরি আইপিএসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকেই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরে এক্স মাধ্যমে বোস জানতে চেয়েছিলেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় ও পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল?
আইপিএস ইন্দিরাকে পুরস্কৃত করেন মমতা
ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, সম্প্রতি পুরস্কৃত হন আইপিএস ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসে চারজন আইপিএস অফিসারকে পুলিশ মেডলের জন্য বেছে নেওয়া হয়। কর্মদক্ষতার জন্য সেই তালিকায় জায়গা পান ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। প্রশ্ন ওঠে, রাজ্যপালের রোষের মুখে পড়লেন যিনি, সেই আইপিএস-কে পুরস্কার দিয়ে কোনও বার্তা দিতে চাꦦইল রাজ্য?
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করতেন ইন্দিরা
ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় নিজেই 🌌নিজেকে প্রশ্ন করলেন ইন্দিরা। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, কী কী প্রশ্ন করা হতে পারে, সেটা নিজেই ভেবে বের করতেন তিনি। তারপর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেই নিজেকে প্র♈শ্ন করতেন। আত্মবিশ্বাসের ঝলক কতটা ফুটে উঠছে, সেটাও বোঝার চেষ্টা করতেন তিনি।
নখদর্পণে কম্পিউটার সায়েন্স থেকে রাজনীতি
স্কুলজীবনে ভুটান ও কলকাতায় পড়াশোনা করেছেন ইন্দিরা। পুলিশের উচ্চপদে থাকা ইন্দিরা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়েও পড়াশোনা করেছেন তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে ইন্দিরার। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমাও অর্জন করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইউপিএসসি-তে তাঁর অপশনাল বিষয় ছিꩲল রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন (/ )