কলকাতা: আরজি কর কাণ্ড অর্থাৎ তিলোত্তম♐া ধর্ষণ-খুনে প্রথম থেকেই অভিযোগ উঠছিল তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলেছে। সে বিষয়টা তিলোত্তমার বাবা-মা থেকে শুরু করে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরাও বলেছেন। সে একই কথা সুপ্রিম কোর্টেও অবতরণ করা হয়েছে। আর সেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে আরও বেশ একটা সুদৃঢ় প্রমাণ সামনে এসেছে। সেমিনার রুমের নীল রঙের একটা ম্যাট্রেসের ওপর পড়ে ছিল তিলোত্তমার দেহ। কিন্তু তাঁর শরীরের ওপর কী রঙের চাদর ছিল? চাদরের রঙ বদলেছে বারবার। অন্ততপক্ষে তিলোত্তমার বাবা-ম💯ায়ের দেওয়া বয়ান ও জুনিয়র চিকিৎসকদের দেওয়া বয়ানে চাদরের রঙে পার্থক্য রয়েছে।
আরজি করের জুনিয়ার ডাক্তারদের বয়ান অনুযায়ী, নীল রঙের ম্যাট্রেসের ওপর ছিল তিলোত্তমার শরীরে ছিল নীল রঙের চাদর। সেমিনা൩র রুম অর্থাৎ প্লেস অফ অকারেন্সের একটি ছবি পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আসে। সেখানেও দেখা যায় নীল রঙ🎃ের চাদর। কিন্তু যখন বাবা-মা তাঁদের মেয়ের দেহ দেখতে পান, বদলে গিয়েছিল চাদরের রঙ! বাবা-মায়ের দেওয়া বয়ান অনুযায়ী, চাদরের রঙ ছিল সবুজ। হাসপাতাল থেকে ফোন পাওয়ার পর ১২.১০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু মেয়েকে দেখতে পেয়েছিলেন দুপুর সাড়ে তিনটেয়। প্রশ্ন হল, তাহলে মাঝের সময়ে চাদর কি কেউ বদলে দিল?
তিলোত্তমার বাবা বলছেন, “তখন আমার মেয়ে বেডের ওপর শুয়ে ছিল। পা দুটো ছড়ানো ছিল। কিন্তু সবুজ চাদর ছিল। (আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন) কিন্তু তোমাদের ছবিতে দেখছি নীল চাদর। (যে ছবি জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে সামনে আনা হয়েছিল)। আমরা যখন দেখেছি সবুজ চাদর।” কেবল চাদরের রঙ নয়, বডির পজিশনও দুক্ষেত্রে দু’রকম। তিলোত্তমার বাবা বলেন, “পাগুলো ছড়ানো ছিল। দুটো পা গদির ওপর ছিল। কিন্তু তোমাদের ছবিতে দেখছি একটা পা ম্যাট্রেসের বাইরে ডায়াসের ওপর রয়েছে। নিশ্চয়ই আমার মেয়ের দেহ কেউ সরিয়েছে।”
তিলোত্তমার বাবা আরও বলেন, “পুলিশের ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় (আইপিএস ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়) কিচ্ছু জানেন না, ওখানে ছিলেন না, তাহলে জোরের সঙ্গে কীভাবে সত্যি কথা বলছেন? টোটালি মিথ্যা কথা বলছেন। সব পুলিশের কাজ। কোনও ঘেরা ছিল না। এটা আমি সাড়ে তিনটের সময়ের কথা বলছি। ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় যে কটা কথা বলেছেন, সব কটা মিথ্যা।” এক্ষেত্রের উল্লেখ্য, ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় প্লেস অফ অকারেন্সের বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বেশ কিছু তত্ত্ব খাঁড়া করেছিলেন। সেখানে সেমিনার রুম চত্বরে বহিরাগতদের ভিড়ের ছবিও দেখিয়েছেন পুলিশ কর্তা। তাঁর বক্তব্য প্রসঙ্গে তিলোত্তমার মা বলেন, “দশটা সাড়ে দশটার সময়ে ভিডিয়োতে যে লোকদের দেখা গিয়েছে, ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেছেন বাড়ির লোক ছিল। আমরা তো তখন পৌঁছয়নি। আমরা ১২.১০ এ পৌঁছেছি। আমি পুলিশের পায়ে পড়ে কেঁদেছি, মেয়েকে দেখতে দিন। আমি বলেছিলাম, আᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚমি ছোঁব না, ক✱িচ্ছু করব না। আমার মেয়ের মুখটা দেখতে দেয়নি।” তিলোত্তমার বাবা বলেন, “ওরা তখন দরজা বন্ধ করে ভিতরে কিছু একটা করছিল আরকী, প্রমাণ লোপাট করছিল। চাদরের রঙ বদলাল কীভাবে? পুলিশ আর কলেজ কর্তৃপক্ষ কি প্রথম থেকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল?”
চাদরের রঙ নীল থেকে সবুজ হল কীভাবে? তথ্য প্রমাণ লোপাট? প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস বলেন, “এই তদন্তের একটা চুল, সূঁচ, দেখা যায় না এমন জিনিসও যদি পরিবর্তন হয়, তাহলেই ধরে নেওয়া যায় তথ্য প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা হয়েছে। সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহেতা সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, আমার পক্ষে তদন্ত করা মুশকিল। সিন অফ ক্রাইম পরিবর্তন করা হয়েছে। নীল চাদর সবুজ হয়েছে, মানে পরিবর🍌্তন হয়েছে। এটꦜা বড় অপরাধ। এটা প্রমাণ করে যদি আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, বড় শাস্তি হবে। একটা ঘরে যখন অপরাধ হয়, তাহলে একজন কনস্টেবল পাঠিয়েও ঘর কর্ডন করা যায়। কলকাতা পুলিশের এক মহিলা কর্তা বলেছেন, ১১ ফুট নাকি কর্ডন ছাড়া ছিল, ওই ১১ ফুটেই কীভাবে বহিরাগত প্রবেশ? বডির পজিশনও বদলানো হয়েছে।”
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ🍸 অজয় গুপ্ত বলেন, “কোনও জিনিস পরিবর্তন হওয়াﷺ মানেই প্রমাণ লোপাট। ক্রাইম সিন অল্টারেশন বড় অপরাধ। অভিযোগ দায়ের করা যেতে পারে। যাঁরা ঢুকেছিলেন, তাঁদের পরিচিতি জানতে হবে। জিজ্ঞাসা করতে হবে কীভাবে হল?”
প্রতিবাদী চি♍কিৎসক সুব👍র্ণ গোস্বামী বলেন, “৯ তারিখের ঘটনা। ১১ তারিখ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আমরা যখন সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রশ্নগুলো তুলেছিলাম, চিকিৎসক সংগঠনগুলোর পক্ষ প্রশ্ন তুলেছি কার স্বার্থে কাকে আড়াল করতে তথ্য প্রমাণ লোপাট করা হচ্ছে? কারা তাতে যুক্ত?”
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন (/ )